অর্থ উপার্জনের আশায় পরিবার, ভিটে বাড়ি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন একদল যুবক। এজেন্টের হাত ধরেই তাঁরা পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। কিন্তু, সেখানে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। কাজ তো মিললোই না, উলটে তাঁদের ভিসা, পাসপোর্ট সমস্ত কিছু আটকে রেখে পাচার করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবেই চাকরি দেওয়ার নাম করে দুবাইয়ে নিয়ে গিয়ে একদল যুবককে পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। বাংলার বিভিন্ন জেলার ৪৫ জন যুবক সেখানে আটকে রয়েছেন। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তাঁরা দেশে ফেরানোর কাতর আর্জি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।
আরও পড়ুন: মা-কে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে সন্তানকে বিক্রি, কয়েক ঘণ্টায় উদ্ধার করল পুলিশ
অভিযোগ, যে এজেন্টের হাত ধরে তাঁরা দুবাইয়ে গিয়েছিলেন নদিয়ার হাঁসখালি থানার সিলবেড়িয়ায় তাঁর অফিস রয়েছে। ওই এজেন্ট বাংলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষদের বিদেশে কাজের জন্য নিয়ে যান। বহুদিন ধরেই তিনি এই ব্যবসা চালাচ্ছেন। অভিযোগ, মে মাসের শেষের দিকে দুবাইয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ওই ৪৫ জন যুবককে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ওই যুবকরা বাগদা, হেলেঞ্চা, দেগঙ্গা প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা পরিচিতদের মাধ্যমে ওই এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিদেশে গিয়ে কাজের জন্য প্রত্যেকে মোটা অঙ্কের টাকাও দিয়েছিলেন ওই এজেন্টকে। কিন্তু, সেখানে যাওয়ার পরে তাঁদের পাসপোর্ট, ভিসা সহ বিভিন্ন ধরনের পরিচয় পত্র কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, প্রথমে তাঁদের বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েকদিন রাখার পর নিয়ে যাওয়া হয় দুবাইয়ে। যুবকদের অভিযোগ, তাঁরা প্রায় এক মাস ধরে সেখানে আটকে রয়েছে। ভিডিয়ো বার্তায় তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমাদের ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু কাজ হচ্ছে না।’
বাগদার এক যুবকের স্ত্রী জানান, কাজ দেওয়ার জন্য এজেন্ট তাঁর স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর স্বামী গিয়ে দেখছেন সেখানে কোনও কাজ নেই। উলটে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি থানায় জানিয়েছেন আটক হওয়া যুবকদের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি জানতে পারার পরে তারা এজেন্টের অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তালা লাগানো রয়েছে। পুলিশও কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এখন তাঁরা চাইছেন সুস্থভাবে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরুক। হোয়াটসঅ্যাপ কলে আশরাফুল মণ্ডল নামে আটক থাকা এক যুবক তাঁরা পরিবারকে জানান, ‘আমরা অসহায় অবস্থায় রয়েছি। এলাকার মানুষ মাঝেমধ্যে কিছু খাবার দিচ্ছেন। তাই খেয়ে বেঁচে রয়েছি। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আমরা কাজ নয় বাড়ি ফিরতে চাই। আমরা চাই সরকার আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’ অন্যদিকে এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে । অন্যদিকে, এই বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনকে জানানো হবে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।