চাকরি দেওয়ার সুপারিশপত্র ঘিরে বিস্ফোরক বিতর্কের আবহে এবার থানার দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন মিয়াঁ। শনিবার বালুরঘাটে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, চক্রান্ত করে একটি ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ধৃত BJP নেতারা জামিন প্রত্যাখ্যান করবেন, লকআপ থেকে বেরিয়ে ঘোষণা সুকান্তর
মফিজউদ্দিনের অভিযোগ, কুমারগঞ্জের বিদ্যুৎ দফতরের অফিস থেকে এক ঠিকাদারের হাত ধরে একটি সরকারি কাগজ বিজেপি নেতাদের হাতে পৌঁছয়। সেই কাগজে সাব স্টেশন ম্যানেজার নাজিমুল হকের সই এবং সিল ছিল ঠিকই, কিন্তু আসল তথ্য বিকৃত করে সেখানে ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সাজানো হয়। তিনি দাবি করেন, এই পুরো ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন কুমারগঞ্জের বিজেপি নেতা সুশীল মার্ডি এবং সুকান্ত মজুমদারের ঘনিষ্ঠ এক সহায়ক। তাঁদেরই মদতে তৈরি হয়েছে ভুয়ো চিরকুট।
ঘটনার জেরে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মফিজউদ্দিন বলেন, তিনি, বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল এবং সাব স্টেশন ম্যানেজার নাজিমুল হক তিনজনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত। তাই তাঁদের নিশানা করেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের এই পাল্টা অভিযোগের জবাবে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, সুকান্তবাবু এমন কিছু পোস্ট করেন না যার পেছনে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না থাকে। তৃণমূল আইনি পথ ধরতেই পারে, কিন্তু সত্যিটা চাপা দেওয়া যাবে না। বিজেপির এসটি মোর্চার সভাপতি সুশীল মার্ডিও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, যে চিরকুট ছড়ানো হয়েছে, সেটি তৈরি করার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং তৃণমূল যদি তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ করে, তবে তিনি আইনের দ্বারস্থ হবেন। তবে চিরকুটে তাঁর পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই সংযোগ তাঁর বাবার নামে। বিজেপি করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চিরকুট প্রকাশ করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, তৃণমূল নেতা মফিজউদ্দিন মিয়াঁর ‘সুপারিশে’ ছ’ লক্ষ টাকার বেশি ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন এক ব্যক্তি। সেই চিঠি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।