মদের আসরে একজন সুরাপ্রেমীর বউকে কটূক্তি করল আর একজন সুরাপ্রেমী। আর তাতেই গোলমাল চরমে উঠল। স্ত্রীর অপমানের ‘বদলা’ নিতে সহকর্মীকে লোহার রড এবং বঁটির আঘাত করা হয়। আর ওভাবেই খুন করা হয় বলে অভিযোগ। দত্তপুকুরের মিষ্টির দোকানের কর্মী পরিতোষ পাণ্ডের খুনের তদন্তে এবার নয়া মোড়। ওই খুনের অভিযোগে সেই দোকানের কর্মচারীকে গ্রেফতার করল দত্তপুকুর থানার পুলিশ। দেহ সোমবার সকালে উদ্ধার করে নিয়ে যায় দত্তপুকুর থানার পুলিশ। পরিতোষের দেহের মাথায় এবং গলায় কাটা দাগ ছিল বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার পর তদন্ত করতে নেমে দেখা যায়, পরিতোষ যে মিষ্টির দোকানে কাজ করত সেই মিষ্টির দোকানে কর্মরত অন্য একজন কর্মী বেপাত্তা হয়েছে সকাল থেকে। তখন তড়িঘড়ি ওই কর্মীর হদিশ পেতে তল্লাশি চালানো হয়। বহুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর বর্ধমানের পূর্বস্থলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। কর্মী পরিতোষের বাড়ি থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় মিষ্টির ব্যবসায়ী বিক্রম সাহার দোকানের কর্মচারী ছিলেন পরিতোষ। সোমবার পরিতোষ কাজে না যাওয়ায় দোকানের মালিক বাড়িতে খোঁজ করতে আসেন। তখনই ঘরের ভিতরে মেঝেতে পরিতোষের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। খবর দেন পুলিশে। দেহ উদ্ধার করে তদন্তে নামে পুলিশ।
আরও পড়ুন: জামিন মিলছে না কেন? সিবিআইকে কুপোকাত করতে পদক্ষেপ টালা থানার ওসির
এদিকে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছে, রাতে তারা দুজনে একসঙ্গে পরিতোষের বাড়িতে বসে মদ খাচ্ছিল। তখন পরিতোষ বিশ্বজিতের বউ সম্পর্কে কটূ মন্তব্য করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে তাকে বটি দিয়ে গলায় আঘাত করা হয় এবং বাড়ির ভিতরে লোহার রড দিয়ে মাথা আঘাত করে সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়। বিশ্বজিৎ দাস দোকানে তারপর আসেনি। সন্দেহ হয় পুলিশের। মালিকের থেকে তখন তথ্য নিয়ে বর্ধমানের পূর্বস্থলী এলাকা থেকে সোমবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। পুলিশের দাবি, বিশ্বজিৎ খুনের কথা স্বীকার করেছে।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, লোহার রডটি স্থানীয় একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে ধৃত বিশ্বজিৎ। শুধু কি বউয়ের প্রতি কুমন্তব্য নাকি টাকা পয়সা সংক্রান্ত কোনও জটিলতা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। আর সমস্তটাই খতিয়ে দেখছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। লোহার রড দিয়ে মাথাতে আঘাত করা হয়। তার জেরে পরিতোষ মাটিতে লুঠিয়ে পড়লে চম্পট দেয় বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, বিশ্বজিৎ একবার টাকা ধার নেয় পরিতোষের কাছে। সেই টাকা শোধ দিতে পারছিল না বিশ্বজিৎ। ওই টাকার বিনিময়ে বিশ্বজিতের স্ত্রীকে দাবি করেন পরিতোষ। তখন খুনের ঘটনা ঘটে।