সর্বহারা সিপিএম নেতার আছে দোতলা বাড়ি, ভুল তথ্য দিয়ে আবাসে নাম তুলে ধরা পড়লেন

সর্বহারা দলের মহান নেতা তিনি। নীতি–আদর্শ নিয়ে চলেন বলে দাবি। অথচ তাঁর বিরুদ্ধেই উঠল পিছিয়ে পড়া মানুষদের বঞ্চিত করার অভিযোগ। কালিয়াচকে ভুল তথ্য দিয়ে নিজের নাম আবাস তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আর সেই জল গড়ায় জেলাশাসকের অফিস পর্যন্ত। এই ঘটনা বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার বেদরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের লালাপাড়া গ্রামে ঘটেছে। সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য সন্দীপ লালার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে। জেলাশাসক এবং বিডিওকে ইমেল করে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য।সম্প্রতি বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সমীক্ষার পর তালিকায় নাম দেখা যায় লালাপাড়ার মহান সিপিএম নেতা সন্দীপের। পঞ্চায়েত সদস্যদের দাবি, সন্দীপের দোতলা বাড়ি আছে। তারপরেও চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম তুলেছেন অন্যজনের টালির বাড়ি দেখিয়ে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য চায়না দাস এবং পিঙ্কি মণ্ডল। তাঁদের বক্তব্য, ‘আমরা চাই যোগ্যরা ঘর পাক। এভাবে দোতলা, তিনতলা বাড়ির মালিকের নাম আবাস তালিকায় থাকা অনুচিত। আমরা অভিযোগ জানিয়েছি জেলাশাসককে। আমরা তাঁর নাম বাতিলের অনুরোধও করেছি।’আরও পড়ুন: অনুব্রত–কাজলের গড়ে খেলা দেখাল জোট, তৃণমূলকে হারিয়ে নির্বাচনী জয় বাম–কংগ্রেসেরইতিমধ্যেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পে টাকা ছাড়তে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে সকল উপভোক্তাকে এই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তার মধ্যেই এমন বড় খবর সামনে এসে হাজির হল। চায়না ও পিঙ্কি বলেন, ‘ব্লক অফিস থেকে সমীক্ষা করতে এসেছিলেন অফিসাররা। তখন সন্দীপ লালা তাঁর দোতলা বাড়ির কাছেই একটি দোকান ঘরকে নিজের বলে দেখিয়ে তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দেন। তারপরই চূড়ান্ত তালিকায় সন্দীপের নাম উঠে যায়। যদিও সন্দীপ লালার পাকা দোতলা বাড়ি আছে। তা সত্ত্বেও নিজের নাম এভাবে চালাকি করে ঢুকিয়ে দেয়। যা এবার ধরা পড়ে গিয়েছে।’স্থানীয় সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। আর যখন রাজ্য সরকার দিচ্ছে তখন সিপিএম নেতা নিজের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এই জন্যই ওরা আজ শূন্য। এই এলাকায় কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না সন্দীপ। তিনি সমীক্ষা করতে আসা অফিসারদের ভুল তথ্য দিয়েছেন। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা মণ্ডলের বক্তব্য, ‘আমাদের পাকা বাড়ি নেই। টালি–বাঁশের বেড়া দিয়ে থাকি। সংসারে অভাব আছে। বর্ষার সময় ভীষণ অসুবিধা হয়। কিন্তু আমরা এমন করিনি। অথচ নেতা হয়ে এমন কাজ করলেন সন্দীপ।’ এই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য পঙ্কজ কুমার মণ্ডলের কথায়, ‘যোগ্যরা ঘর পান, সেটাই চাই। সন্দীপকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। বাড়িতে গেলেও দেখা পাওয়া যায়নি।’