ওয়াকফ সংশোধনী আইন কার্যকর হয়ে গিয়েছে দেশে। এই আবহে ৮ এপ্রিল ওয়াকফ সংশোধনীর বিরুদ্ধে জঙ্গিপুরে পথে নেমেছিলেন অনেকে। সেই প্রতিবাদ পরিণত হয়েছিল অবরোধে। আর অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়েছিল। ঘটনাটি ঘটে জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার উমরপুরে। এই আবহে হিংসা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নাকি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সেই এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনই দাবি করল বিজেপি। এরই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে অমিত মালব্য এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'যে মানুষটা সিএএ প্রতিবাদের সময় 'কা কা ছি ছি' গেয়েছিলেন, তাঁর কি ওয়াকফের বিরুদ্ধে গান গাওয়ার জন্যে কণ্ঠস্বর নেই?' এদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিজের পোস্টে লেখেন, 'রাজ্য পুলিশ মার খাচ্ছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের তোষণের রাজনীতি করতে ব্যস্ত।' (আরও পড়ুন: ইউনুসের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা ডোভালের, বৈঠক নিয়ে রহস্য বাড়ালেন বাংলাদেশের খলিলুর)
মমতাকে তোপ দেগে অমিত মালব্য নিজের পোস্টে লেখেন, 'অন্য রাজ্যে হিংসা ছড়ালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চটজলদি কুমিরের কান্না শুরু করে দেন। তবে যখন মুর্শিদাবাদে তাঁর ভোটব্যাঙ্করা হিংসা ছড়ায়, তখন তিনি নীরব হয়ে যান। তিনি তখন ইন্টারনেট বন্ধ করে দেন সত্যিটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যে। এই একই মমতা যখন অন্য রাজ্যের ঘটনা নিয়ে সরব হন, নিজের রাজ্যে সেন্সরশিপের মাধ্যমে তথ্য চাপা দিচ্ছেন। জঙ্গিপুরের মতো জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে জনসাধারণের নিরাপত্তার জনিযে নয়, সত্যিটাকে ধামাাপা দেওয়ার জন্যে। সেখানে ওয়াকফের নামে রেললাইনে যে তাণ্ডব চলেছে, সেই তথ্য চাপা দিতে চাইছে সরকার।'
এরপর অমিত মালব্য আরও লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল চেহারা: সংবিধানের জন্যে তাঁর বিন্দুমাত্র সম্মান নেই, সুপ্রিম কোর্টকে তিনি মানেন না। এবং তাঁর পুলিশ মিথ্যা দাবি করে যে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে আছে। সেই ফাঁকে দিনের পর দিন ব্ল্যাকআউট জারি করা ছাকে। যদি সবকিছু নিয়ন্ত্রণেই থাকে, তাহলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হয়েছে কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী লুকোতে চাইছেন? নাকি যে মানুষটা সিএএ প্রতিবাদের সময় 'কা কা ছি ছি' গেয়েছিলেন, ওয়াকফের বিরুদ্ধে গান গাওয়ার জন্যে তাঁর আর কণ্ঠস্বর নেই?'
উল্লেখ্য, সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশের প্রতিবাদে ৮ এপ্রিল উমরপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পুলিশ সেই অবরোধ তুলতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে অবরোধকারীরা। পালটা টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের অন্তত ২টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এর আগের দু'দিনও সুতি, সামশেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ চলেছিল ওয়াকফ সংশোধনীর বিরুদ্ধে। কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছিল পুলিশ। আর ৮ এপ্রিল ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েকশো মানুষ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলছিল অবরোধ। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিক্ষোভকারীরা। এরপর উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইট বৃষ্টি। জনতা ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রায় দুঘন্টা ধরে চলে খণ্ডযুদ্ধ।