ট্যাব কেলেঙ্কারি এখন বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। আর এই ঘটনায় রাজ্যের একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। আজ, শুক্রবার আসানসোলে দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যোগ দিয়ে এই বিস্ফোরক দাবি করেন দিলীপ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। অপরদিকে ট্যাব কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। এই ঘটনায় জড়িতদের গুলি করে মারার নিদান দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এদিকে ট্যাব কেলেঙ্কারি কাণ্ডে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। ট্যাবের টাকা ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে যাওয়ার কথা। সেখানে অন্যদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। হ্যাকাররা প্রকল্পের সাইট হ্যাক করে নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর লিখে দিয়েছে। তার ফলেই এই গরমিল হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ইতিমধ্যেই তদন্ত করতে সিট গঠন করা হয়েছে। এই আবহে বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘আমাদের দেশে গুলি করার আইন নেই। থাকলে গুলি করা উচিত ছিল। যারা সরকারের বদনাম করে পড়ুয়াদের প্রতারিত করেছে তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’, দলের একাংশ নেতা–কর্মীদের নিয়ে সরব মদন
অন্যদিকে ট্যাব কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা ও মালদা পুলিশ। ১ হাজার ৯১১ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা নিয়ে জালিয়াতি করেছে হ্যাকাররা। এই নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানে সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরা এই টাকা বিলি করে না। তাহলে কেলেঙ্কারিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নাকি অফিসাররা জড়িত? কারা এটা করল? তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত। জড়িতদের গুলি করে মারা উচিত।’ এই গুলি করে মারা উচিত বা এনকাউন্টারের কথা বলে বিতর্ক বাড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ।
এই মন্তব্যের পরই আসরে নেমে পড়েছেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ ডা. সুভাষ সরকার। এই বিষয়ে তিনি বললেন, ‘হ্যাকাররা অ্যাকাউন্ট নম্বর পাবে কোথা থেকে? হ্যাকার এবং তৃণমূল নেতাদের চক্র থেকেই ঘটনা ঘটেছে। আসলে এই সরকার দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। তাই যতক্ষণ না সরকার বদলাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সব তদন্ত করে কিছুই হবে না।’ পাল্টা সুর সপ্তমে তুলে অরূপ চক্রবর্তীর কথায়, ‘এই কুকীর্তি করে সরকারের বদনাম করে, ছাত্রদের প্রতি প্রতারণা করেছে তাঁদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। বিজেপি কী বলল তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত। যাঁরাই দোষী তাঁদের এমন সাজা দিতে হবে যেন সমাজ এদের বয়কট করে।’