পিস রুম দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটাই ছিল বড়লাটের চমক। তারপর সম্প্রতি এসেছে আমনে–সামনে কর্মসূচি। যেখানে রাজ্যপাল সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন। এই সবটাই খোলা হয়েছে রাজভবনে। এবার রাজভবনে খোলা হল ‘অ্যান্টি কোরাপশন সেল’। যার নেতৃত্বে স্বয়ং রাজ্য়পাল। এই অ্যান্টি কোরাপশন সেল খোলার অর্থই হল তা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। এই সরকারের বিরুদ্ধে এখানে অভিযোগ জমা পড়ুক চান রাজ্যপাল। সুতরাং নবান্ন–রাজভবন সংঘাত নয়া মোড় নিতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে মঙ্গলবার বিধানসভায় সাংবাদিকদের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, আগে দুর্নীতি থেমে যাক তারপর তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে দিল্লি যাবেন তিনি। নানা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা পেতে দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিজেপি বিধায়কদের। বাংলার মানুষের স্বার্থে কাজ করার কথা বলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। আর এই মন্তব্যের পরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সিদ্ধান্ত নিলেন রাজভবনে খুলবেন অ্যান্টি কোরাপশন সেল। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি সরগরম।
ঠিক কী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী? অ্যান্টি কোরাপশন সেল খুলে রাজ্য়পাল আসলে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চাইছেন বলে অনেকে মনে করছেন। এবার শিক্ষায় পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির জেরেই অ্যান্টি কোরাপশন সেল খুললেন রাজ্য়পাল সিভি আনন্দ বোস। যা এবার এই নিয়ে আরও সুর চড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘সম্পূর্ণভাবে একটা রাজভবন থেকে উচ্চশিক্ষাকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা চলছে। এটা একটা অবিজেপি শাসিত রাজ্য। যে কোনও অবিজেপি রাজ্য়েই এই চেষ্টা চলছে। তবে এই রাজ্য়ে নজিরবিহীন। উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করে, এটা যখন উনি করছেন, তখন উনি ধরে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির আখড়া। এটা অগণতান্ত্রিক। শীর্ষ আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।’
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়বার রাজ্য সফরে আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কি দেখা হবে?
রাজ্য়পাল কি এভাবে রাজভবনে অ্যান্টি কোরাপশন সেল খুলতে পারেন? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে। যদি মেঘালয়, ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্য়পাল তথাগত রায় বলেন, ‘বেআইনি কাজ কেন হবে? তথ্য় রাখার দায় তো রাজ্য়পালের। উনি করতেই পারেন।’ কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘যেখানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার আছে, সেখানে রাজ্যপালের রোল অত্যন্ত সীমিত। রাজ্যপালকে অ্য়াডভাইসের উপর চলতে হয়। স্বাধীনভাবে লেজিসলেটিভ ক্ষমতা নেই। তিনি অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারবেন আইনসভা বললে। তাঁর ক্ষমতা নেই। রাজভবনে আইনত বিকল্প প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করতে পারেন না।’