প্রতিবাদ, আন্দোলন তো চলছে। চলছে নানাস্তরে আলাপ-আলোচনা। কিন্তু, তাতে কি হারানো চাকরি, পদ কিংবা সম্মান ফিরবে? সেটা ফেরাতে একমাত্র উপায় হল - আইনি লড়াই লড়ে জয় অর্জন করা। এমনটাই মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীদের একাংশ। আর সেই কারণেই এবার তাঁরা সরাসরি, ব্যাপক আকারে আইনজ্ঞদের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
আজ (সোমবার - ১৪ এপ্রিল, ২০২৫) সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে সরকারি ছুটি রয়েছে। ফলত, বিভিন্ন সরকারি অফিসের মতো আদালতেও এদিন ছুটি থাকবে। এদিনই তাই আইনজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে সরাসরি আমন্ত্রণ জানালেন চাকরিহারা এবং আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।
তাঁদের আবেদন, আইনজ্ঞরা আসুন তাঁদের মঞ্চে, পরামর্শ দিন, কীভাবে এই দুর্দিনে নিজেদের কষ্টার্জিত চাকরি ও মর্যাদা ফেরত পেতে পারেন তাঁরা। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই চাকরিহারারা নানা দলে ভাগ হয়ে একাধিক জায়গায় ধরনা, বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। সেগুলি সামগ্রিকভাবে একটি বৃহত্তর আন্দোলনেরই নানা রূপ বলে দাবি করা হচ্ছে। তেমনই একদল চাকরিহারা ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। সেখানে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এই আয়োজনের নেপথ্যে রয়েছে - 'যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী ২০১৬ ঐক্যমঞ্চ'।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অবস্থানস্থলে একটি বাক্স রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র আইনজীবীরাই নন, যেকোনও মানুষই চাইলে নিজের মতামত ও পরামর্শ টুকরো কাগজে লিখে তা ওই বাক্সে ফেলতে পারেন। আইনি পথে হারানো চাকরি ফেরত পেতে সেই সমস্ত মতামত ও পরামর্শ খতিয়ে দেখবেন ভুক্তভোগীরা। তাতে যদি সুরাহার কোনও দিশা দেখা যায়, তাহলে সেই পথেও এগোনো হবে।
অন্যদিকে, সল্টলেকের এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন) ভবনের সামনেও চাকরিহারাদের একটি অংশ অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন অনশনও শুরু করেছিলেন। কিন্তু, এক অনশনকারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাকিরা অনশন তুলে নেন। যদিও ৭ মে (২০২৫)-এর পর ফের আন্দোলনকারীরা অনশন করবেন বলে জানা গিয়েছে। তার আগে রিলে অনশনের কর্মসূচি পালন করা হতে পারে চাকরিহারাদের একাংশের তরফে। সেই কর্মসূচি আগামী ১ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত চলতে পারে।
শোনা যাচ্ছে, একদিকে যখন ধর্মতলায় আইনজ্ঞদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে চাকরিহারাদের তরফে, অন্যদিকে সল্টলেকে অবস্থানরত চাকরিহারাদের পক্ষ থেকে সিবিআই-কে ইমেল করার তোড়জোড় চলছে। সেই ইমেলে সিবিআই-কে তাদের হাতে থাকা যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার আবেদন জানানো হবে বলে দাবি করা হচ্ছে।