স্কুলে একসঙ্গে পড়তেন। সেইসময় নেহাতই ‘ক্লাসমেট’ ছিলেন। তাঁদের মধ্যেই যে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে, সেটা সম্ভবত কখনও ভাবতে পারেননি। আর এখন দু'জনে একে অপরের ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ হয়ে উঠেছেন। আর সেই ‘সাপোর্ট সিস্টেম’-র একজন যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন, তখন আবেগ মাখা বার্তা দিলেন অপরজন। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর ঘোষণার পরে স্ত্রী প্রীতি বললেন, ‘ডিয়ার অশ্বিন, কীভাবে একটা কিটব্যাগকে একসঙ্গে রাখতে হয়, সেটা না জানা থেকে সারা বিশ্বের স্টেডিয়ামে তোমার সঙ্গে যাওয়া, তোমায় সমর্থন করা, তোমায় দেখা, তোমার থেকে শেখা- পুরো বিষয়টা অত্যন্ত আনন্দের হয়ে থেকেছে।'
প্রীতি আরও বলেন, 'তুমি যে দুনিয়ার সঙ্গে আমার পরিচিতি করে দিয়েছো, যা আমায় একেবারে কাছ থেকে এমন একটা খেলা দেখা এবং উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে, যে খেলাটাকে আমি ভালোবাসি। আর সেইসঙ্গে আমায় দেখিয়েছে যে বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকতে কতটা আবেগ, কঠোর পরিশ্রম এবং শৃঙ্খলার প্রয়োজন হয়। কখনও কখনও সেটাও যথেষ্ট হয় না।’
'কখনও কখনও কোনও কিছুই যথেষ্ট হয় না', আবগেতাড়িত প্রীতি
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে যে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য কেন তোমায় এসব করতে হত এবং আরও বেশি কিছু করতে হত। তুমি যদি লাগাতার নিজের দক্ষতাকে আরও ক্ষুরধার না করে তোলো এবং সেটাকে কাজে করে দেখাও, তাহলে পুরস্কার, সেরা পরিসংখ্যান, ম্যাচের সেরার পুরস্কার, প্রশংসা এবং রেকর্ডের কোনও দাম থাকবে না। কখনও কখনও কোনও কিছুই যথেষ্ট হয় না। আর তুমি যখন নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ইতি টানলে তখন আমি তোমায় শুধু বলতে চাই যে সব ঠিক আছে। সবকিছু ঠিক হবে না। তুমি হওয়ার জন্য তোমার জন্য যে চাপ ছিল, সেটা কমিয়ে ফেলার সময় এবার।’
ঘুরিয়ে কোনও বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রীতি?
আর প্রীতির সেই আবেগমাখা বার্তার অংশ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে যে অশ্বিনের স্ত্রী কি কোনও ঘুরিয়ে বার্তা দিলেন? কারণ প্রীতি জানিয়েছেন যে এত রেকর্ডের পরও টিকে থাকতে অনেক কিছু করতে হত অশ্বিনকে। অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, তাহলে কি দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেকের থেকে অশ্বিনকে বেশি কিছু করতে হত, সেটা বোঝাতে চেয়েছেন প্রীতি?
প্রীতি তো ঠিকই বলছেন, পালটা মত অনেকের
যদিও অপর অংশের বক্তব্য, অহেতুক একটা ভালোবাসা এবং আবেগে মাথা বার্তাকে নিয়ে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। প্রীতি তো ঠিকই বলেছেন যে টিকে থাকার জন্য অশ্বিনকে বেশি কিছু করতে হত। আর সেটা তো করতেই হয় সব খেলোয়াড়কে। রেকর্ড, পুরস্কার, পরিসংখ্যান - সবই অতীতে হয়ে গিয়েছে। ম্যাচে যখন কোনও ব্যাটারকে বল করতেন অশ্বিন, সেগুলি প্রাসঙ্গিক থাকত না। ওই নির্দিষ্ট বলটা কেমন হবে, সেটার উপরেই সবকিছু নির্ভর করত। আর সেটার জন্য বিপক্ষের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হত। বিপক্ষও তো অশ্বিনকে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও বিপক্ষকে মাত দেওয়ার জন্য ভারতের তারকা লাগাতার পরিশ্রম করতেন, সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রীতি।