পুণেতে স্বপ্নের অভিষেক হয়েছে হর্ষিত রানার। প্রথম একাদশে না থেকেও বল করার সুযোগ পান তিনি। হঠাৎ এক ঘটনার জেরে কিছুটা অপ্রস্তুত ভাবে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। শিবম দুবের পরিবর্তে 'কনকাশন সাব' হিসেবে এসে ‘হিরো’ হয়ে ওঠেন রানা। বল হাতে চার ওভারে ৩৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। আউট করেন লিয়াম লিভিংস্টোন, জেকব বেথেল এবং জেমি ওভারটনকে। আর এরপরেই ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জোস বাটলারের তোপের মুখে পড়েন ম্যাচ রেফারি জাভাগল শ্রীনাথ। কোনও ভাবেই শিবমের লাইক-টু-লাইক পরিবর্ত হিসেবে হর্ষিতকে মানতে পারছেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটাররাও। বিতর্কের মুখে ভারতও বল ঠেলেছে শ্রীনাথের কোর্টেই।
জাভাগল শ্রীনাথের পরিচয়:
কিন্তু কে এই ম্যাচ রেফারি জাভাগল শ্রীনাথ? চেনেন তাঁকে? একটা সময় ভারতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। বেশ নামডাক ছিল। ভারতের একমাত্র ফাস্ট বোলার হিসেবে ওডিআই ক্রিকেটে তিন শতাধিক উইকেট লাভ করেছেন তিনি। অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ভারতীয় দলের প্রথম সারির পেস বোলারদের মধ্যে একজন ছিলেন। ১৯৯১ সালে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। কিংবদন্তি কপিল দেবের পর দ্বিতীয় ভারতীয় পেসার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেট নেওয়ার নজির রয়েছে শ্রীনাথের।
ভারতের হয়ে ২২৯টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। উইকেট নিয়েছিলেন ৩১৫টি। গড় ২৮.০৮। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার এবং সেরা বোলিং ফিগার ২৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট। এছাড়া ৬৭টি টেস্ট খেলেছিলেন জাভাগল। উইকেট নিয়েছিলেন ২৩৬টি। গড় ৩০.৪৯। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১০ বার এবং দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়েছেন ১ বার। ইনিংসের সেরা বোলিং ফিগার ৮৬ রান দিয়ে ৮ উইকেট।
বলের গতিতে চোখ ফাটিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারের:
সেই সময় বলে অত্যাধিক পেসের জন্য পরিচিত ছিলেন জাভাগল শ্রীনাথ। ১৫০+ কিমি প্রতি ঘণ্টায় বল করার ক্ষমতা ছিল তাঁর। ১৯৯২-৯৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এক অঘটন ঘটিয়ে বসেছিলেন তিনি। জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি। দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছিল। ব্যাট করছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটার মেরিক প্রিঙ্গল। সেই সময় শ্রীনাথের দ্রুত গতির বাউন্সার হেলমেটের ফাঁক দিয়ে গলে সজোরে গিয়ে লাগে তাঁর চোখে, মারাত্মক আঘাত পান। চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে প্রিঙ্গলকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়। এর ফলশ্রুতি হিসেবে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট মাঠে দেখা যায়নি এই দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডারকে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন শ্রীনাথ। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ম্যাচ রেফারি হিসেবে মনোনীত করে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ২৪টি টেস্ট, ১২২টি ওডিআই ও ২৫টি টি-২০ ম্যাচ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ক্রিকেটে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৯৯ সালে অর্জুন পুরস্কার লাভ করেছিলেন তিনি।