রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতি জেলায় পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। মোট বাহিনীর পরিমান কোনও ভাবেই ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকে কম হলে চলবে না। আর এই বাহিনী কেন্দ্রের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাইতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। বুধবার এক রায়ে এই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। সঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, মুরোদে না কুলালে যেন ইস্তফা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এর পর মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যে প্রতি জেলার জন্য ১ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এর পরই প্রশ্ন ওঠে, জেলা পিছু ১ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে কী ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। ১ কোম্পানিতে থাকেন ১০০ জন মতো আধাসেনা। যদের মধ্যে ৮০ জনকে মোতায়েন করা যায়।
বিষয়টি নিয়ে এদিন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিরোধীরা। তাদের দাবি ছিল, আদালত অবমাননার দায় থেকে বাঁচতে জেলা পিছু ১ কোম্পানি করে মোট ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। এই বাহিনী দিয়ে কোনও মতেই অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। এদিন আদালতে হাজির ছিলেন না কমিশনের কোনও আইনজীবী।
এর পর ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজ্যে প্রতি জেলায় পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। সেই বাহিনীর সংখ্যা কোনও ভাবেই ২০১৩ সালের বাহিনীর থেকে কম হলে চলবে না। কারণ এর মধ্যে রাজ্যে জেলার সংখ্যা বেড়েছে। বাহিনীর জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রের কাছে আহ্বান জানাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে।
এর পর প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন আদালতে হাজির নেই কমিশনের আইনজীবী? কেন আদালতকে এড়িয়ে যাচ্ছে কমিশন? কমিশনারের ওপর কোনও চাপ থাকলে তিনি পদত্যাগ করুন। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারলে কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত। সেখানে রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে মোট ৮২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছিলেন তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে।