পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বড় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ভোটের হিংসায় এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন কোর্টে এই শুনানি চলাকালীন, বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ‘আশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করা উচিত।’
এই মামলা রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হবে, তা আগেই জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিকে, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়েও বড়সড় নির্দেশ দিল আদালত। পঞ্চায়েতে হিংসা ঘিরে বিরোধীরা দ্বারস্থ হয় কলকাতা হাইকোর্টের। কলকাতা হাইকোর্টে এই নিয়ে দায়ের করা হয় মামলা। মামলার শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ‘ রাজ্যের উচিত আদালতের নির্দেশ মতো আইশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে, সেই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ কলকাতা হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, অশান্তি বা হিংসার জেরে যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা না দিতে পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া উচিত কমিশনের তরফে। এর আগে, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ঘিরে সিবিআই তদন্তের কথা বলছে হাইকোর্টের নির্দেশিকা। উল্লেখ্য, নির্বাচনি নথি বিকৃত করার একটি নির্দিষ্ট অভিযোগ ঘিরে মামলা যায় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলা ঘিরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সিবিআইকে সেই মামলায় ৭ তারিখের মধ্যে নথি জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নথি বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। আর সেই মামলাতেই তদন্তে নামবে সিবিআই। যেহেতু রাজ্য সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা, তাই রাজ্য সরকারকে এই তদন্তের ভার দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে কোর্টের তরফে কড়া বার্তা দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। উলুবেড়িয়ায় কাশ্মীরা বিবি ও ওমজা বিবির মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তাঁদের ফর্ম স্ক্রুটিনিতে বাতিল হয়। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের নথি বিকৃত করা হয়েছে। বিডিওর কাছে তাঁরা অভিযোগ জানাতে গেলে, তিনি তা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ।
এদিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বহু প্রার্থীদের নাম কেন নেই? এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় আইএসএফ ও বামেরা। অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব শেষে স্ক্রুটিনির পরও কেন দেখা যাচ্ছে না ওই প্রার্থীদের নাম? এই প্রশ্ন তুলে, বহু অভিযোগে তারা সরব হয়ে মামলা দায়ের করে। এছাড়াও বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগ, ভাঙড়ে অশান্তি, মনোনয়ন প্রত্যাহার বাধ্য করার প্রসঙ্গও টেনে আনেন বিরোধীরা। এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন,'একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার!' রাজ্যকে সঠিকভাবে আইনশৃঙ্খলা ধরে রেখে আদালতের নির্দেশমতো চলার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।