এক কথায় রাজনীতিবিদদের জন্য নির্বাচন হল 'পরীক্ষা'। সেই পরীক্ষায় প্রচার হল প্রশ্নকর্তা ভোটারের জবাব দেওয়ার পালা। তবে সব পরীক্ষার মতোই এতেও জবাব দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় মেলে। পরীক্ষার খাতা চেক হওয়ার আগে বা ভোটগ্রহণের আগে বাজে 'শেষের ঘণ্টা'। তারপরই খাতায় লেখা বন্ধ করতে হয় বা প্রচার বন্ধ করতে হয়। তবে সেই 'শেষের ঘণ্টা' বেজে যাওয়ার পরও নাকি শুক্রবার রোড শো চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। আর তখনই দিলীপকে আটকাতে সেখানে তড়িঘড়ি পৌঁছে যায় নির্বাচন কমিশন। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের রায়ান স্কুল মোড় থেকে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ একটি রোড শো শুরু করেছিলেন। সেই রোড শো শেষ হওয়ার কথা ছিল রায়ান গ্রাম ঘুরে স্কুল মোড়ে। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই রায়ান দুর্গাতলাতে কমিশনের প্রতিনিধিরা দিলীপ ঘোষের সেই রোড শো আটকে দেওয়া হয়। অভিযোগ, কমিশনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ের পরও সেই প্রচার চলছিল।
এদিকে নির্বাচন কমিশন গতকাল দিলীপ ঘোষের রোড শো আটকে দিলে আধিকারিকদের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এমনকী নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের 'তৃণমূলের দালাল' আখ্যা দেন বিজেপি কর্মীরা। এদিকে গোটা ঘটনায় দিলীপ ঘোষের দাবি, সময় মেনেই প্রচার করা হচ্ছিল। 'অকারণে' তাঁর প্রচার গাড়ি আটকানো হয় বলে দাবি করেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী। অপরদিকে জেলা বিজেপি সভাপতি অভিজিতের দাবি, অনুমতি নিয়েই শান্তিপূর্ণ মিছিল হচ্ছিল। স্থানীয় মানুষরাই নাকি দলের কাছে অনুরোধ করেছিলেন যাতে সেই গ্রামে একবার দিলীপ ঘোষকে ঘোরানো হয়। তবে তা সত্ত্বেও নাকি দিলীপ ঘোষের সেই মিছিল দু'বার আটকানো হয়। এদিকে গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, প্রচারের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ায় রোড শো বন্ধ করতে বলা হয়েছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের।
এদিকে শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরে দিলীপ ঘোষের রোড শো চলাকালীন তাঁকে ঘিরে 'জয় বাংলা' স্লোগান উঠেছিল। সেই সময় বিক্ষোভরত তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করে ফুল ছোড়েন দিলীপ ঘোষ। আবার অনেকের উদ্দেশে চকোলেটও ছুড়ে দেন বিজেপি প্রার্থী। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনার বিতর্ক না বাড়িয়ে বলেন, 'দিলীপ ঘোষ সম্মানীয় ব্যক্তি। তাঁর মিছিল চলাকালীন আমরা জয় বাংলা ধ্বনি তুলেছিলাম। তার জবাবে তিনি কিছু বলেননি। শুধু দু’টো চকোলেট দিয়েছিলেন।'