আজ, সোমবার চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন বড় কথা ঘোষণা করলেন বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীররঞ্জন চৌধুরী। সকালেই আশঙ্কার সুর শোনা গিয়েছিল তাঁর কণ্ঠে। তিনি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে হারাতে চায়। ইউসুফ পাঠানকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। বিজেপি হাত শক্ত করতে চায় দিদি। আর তার পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, অধীর চৌধুরী কি হেরে যেতে চলেছেন বহরমপুর কেন্দ্রে? কারণ চতুর্থ দফার ভোট শেষের আগেই অধীররঞ্জন চৌধুরীর মুখে শোনা গেল পুনর্নির্বাচনের কথা। যিনি কদিন আগেই বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরে গেলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো। রাস্তায় বসে বাদাম বেচবো। তিনিই সবার আগে দাবি তুললেন, পুনর্নির্বাচনের।
আজ নিজের গড়েই অধীরকে গো–ব্যাক স্লোগান শুনতে হয়। গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। ঘেরাও হন অধীর। গালিগালাজ শুনতে হয়। সালারে এগোতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন অধীর চৌধুরী। এই ঘটনার পরই পরিস্থিতি যে আগের মতো নেই সেটা বুঝে যান অধীর। আর ইউসুফ পাঠানকে দেখা যায় ভোট কর্মীদের সঙ্গে সেলফি তুলতে। কারণ তিনি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। এই আবহে অধীর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও যাঁরা পুলিশের দালাল তাঁদের তাড়াতে পারেনি। এখানে কিছু পুলিশ তৃণমূলের দালালি করতে এসেছে। কিছু প্রিসাইডিং অফিসাররাও আছে। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে রি–পোলের দাবি করব। আমাদের ভোট করতে দেওয়া হয়নি। ৯ থেকে ১০টি বুথে ছাপ্পা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন অধীর চৌধুরী হারুক বিজেপি জিতুক।’
আরও পড়ুন: ‘বিজেপি বড়জোর ১৯৫ আসন পাবে’, ইন্ডিয়া সরকার গড়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী সুর মমতার
এদিকে এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্ব থেকে দেখা যাচ্ছিল বারবার মেজাজ হারাচ্ছিলেন অধীর চৌধুরী। কাউকে আঘাত করছিলেন, কারও হাত মচকে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। সেখানে ইউসুফ পাঠানকে নিশ্চিন্তে প্রচার করতে দেখা যায়। একবারও কোনও কটূ কথা তাঁকে বলতে শোনা যায়নি। মেজাজ হারাতে দেখা যায়নি। তাই ভোটের দিনও সবার কাছ থেকে সাড়া পেলেন ইউসুফ। সেখানে অধীর চৌধুরীকে বলতে হচ্ছে, ‘আমাকে হারাতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করা হচ্ছে। ওদের মূল উদ্দেশ্য অধীর চৌধুরীকে হারানো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিতু মহিলা। ২০২৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না আমি জানি।’
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অধীর চৌধুরী যা বলছেন তা নিজের হতাশা থেকে বলছেন। এতে তৃণমূল কংগ্রেস কিছু মনে করছে না। বহরমপুর চষে বেড়াতে শুরু করেন অধীর। কিন্তু ভোটের সকালে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের দয়ানগর এলাকায় অধীররঞ্জন চৌধুরীর কনভয় আটকায় বহরমপুর সদরের ডিএসপি সুশান্ত রাজবংশী। তাতেই ক্ষেপে ওঠেন অধীর। যদিও পুলিশের বক্তব্য, অধীর চৌধুরী তাঁর নিজের ব্যক্তিগত একটি গাড়ি এবং সিকিউরিটির একটি গাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। অন্য কোনও গাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন না। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অধীর। তাতে পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তপ্ত হয় বহরমপুর শহরে।