ছোটপর্দার ‘ইস্মার্ট জোড়ি’ সম্রাট মুখোপাধ্যায় ও ময়না মুখোপাধ্যায়। দেখতে দেখতে দাম্পত্যের ২২ বছর পার করে ফেলেছেন দুজনে। দুই যমজ সন্তানকে নিয়ে এখন ভরা পরিবার দুজনের। বিয়ের পর মাতৃত্বের সুখ পেতে লম্বা অপেক্ষা করতে হয়েছে ময়ানকে। ১৬ বছর পর তাঁর কোল আলো করে আসে যমজ পুত্র সন্তান।
২০১৮ সালে জন্ম হয় সম্রাট ও ময়নার যমজ পুত্র সাগর সম্রাট ও সমুদ্র সম্রাটের। এখন তাঁকে ঘিরেই ময়নার গোটা জীবন। যদিও একটা সময় তিন-তিনবার গর্ভপাতের যন্ত্রণা সইতে হয়েছে ময়নাকে। বছর কয়েক আগে জাতীয় টেলিভিশনে নিজেদের মুখে এই কথা জানান সম্রাট-ময়না। সেই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সেইসব ভুলে মাতৃত্ব নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন ময়না। এই সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ময়না জানান, যমজ সন্তান আসছে এই কথা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিলেন। আনন্দে আত্মহারার হওয়ার সেই মুহূর্তটা আজও গেঁথে রয়েছে মনে। তাঁর কথায়, ‘একটা সন্তানেরই পরিকল্পনা ছিল। ভগবানের হয়তো এমনটাই ইচ্ছে। তাই সেইমতো সবটা হয়েছে।’
এখনও ৬ বছর বয়স হয়নি দুই পুত্রের। যমজ সন্তান সামলানো বেশ চ্যালেঞ্জিং, ময়না বলেন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সম্রাট যথেষ্ট যত্ন নিতো তাঁর। মা-ও খেয়াল রাখতেন একটানা। সন্তানের জন্মের পর হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় মা-কে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন ময়না। সেই থেকে ময়নার দুই পুত্রকে মানুষ করতে মেয়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাচ্ছেন তিনি। এক কথায় মা-ই তাঁর সাপোর্ট সিস্টেম।
মা হওয়ার পর মাত্র ৪ মাসের ব্রেক নিয়েছিলেন ময়না। মা পাশে থাকাতেই দ্রুত ছোটপর্দায় ফিরতে পেরেছিলেন অভিনেত্রী। যমজ সন্তান হওয়ায়, তাঁদের খিদে হোক বা ঘুম সবটাই একসঙ্গে। একজন কাঁদলে সেই আওয়াজে অন্যজনও ঘুম থেকে উঠে পড়ত নিমেষে। সেইসব সামলাতে ময়নার পাশে ছিলেন তাঁর মা। ১৭ সেকেন্ডের ছোটবড় সাগর ও সমুদ্র। ছোটছেলে দিদিমা ভক্ত, বড় ছেলের কাছে মা বেশি প্রিয়।
ময়নার কথায়, ‘দিনের শেষে ওদের মুখটা দেখলে শান্তি’। এখন কাজের জায়গাও সেইভাবেই গুছিয়ে নিয়েছেন অভিনেত্রী। শনিবারটা দুই ছেলের সঙ্গে সময় কাটান। সাগর ও সমুদ্রকে ঘিরেই ময়নার গোটা পৃথিবী।
প্রসঙ্গত, আর্থিক কারণে প্রথমবার গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সম্রাট ও ময়না। সম্রাট ইস্মার্ট জোড়িতে জানিয়েছিলেন, ‘প্রথমবার যখন ও অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল, আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল।…. আমরা তখন বাবা-মা’র থেকে আলাদা থাকছিলাম। ওই একটা ঘরে সন্তানকে বড় করা খুব কঠিন ছিল'। ময়না জানিয়েছিলেন, ‘তৃতীয়বার গর্ভপাত করানোর সময় আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল, মনে একটা বিষয় চলছিল, আমার জীবনে কি এমনটাই ঘটতে থাকবে? আমি কি কোনওদিন নিজের সন্তানের মুখ দেখতে পাব না? কারণ বারবার এমন শারীরিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেলে ভবিষ্যতে হয়ত আমি মা নাও হতে পারি’।