ফের নক্ষত্রপতন। বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি মোহাম্মদ রফিকের মৃত্যুর খবরে মন ভারাক্রান্ত কবিতা প্রেমীদের। খবর, রবিবার হৃদযন্ত্র বিকল হয়েছে মৃত্যু হয়েছে এই বর্ষীয়ান কবির রাত সাড়ে আটটা নাগাদ। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
জানা যাচ্ছে, বর্তমানে ঢাকাতেই থাকতেন কবি। রবিবার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের বৈটপুরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বরিশালের এক হাসপাতালে। তারপর একটু সুস্থ হলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ঢাকাতেই। পথে মাদারিপুরের কাছে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে চিকিৎসকরা কবি মোহাম্মদ রফিককে প্রয়াত বলে ঘোষণা করেন।
যৌবন থেকেই বামপন্থয় বিশ্বাসী ছিলেন মোহাম্মদ রফিক। ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর জন্ম অবিভক্ত বাংলাতেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। যাটের দশক থেকে কবিতা লেখার শুরু। মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন অধ্যাপক হিসেবে। ২৯ জুন ২০০৯ পর্যন্ত দীর্ঘকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
সোমবার তাঁর অন্ত্যষ্টি হবে দেশের বাড়ি বাগেরহাটের বৈটপুরেই। গ্রামের মাটিতেই মিশবে কবির দেহ।
১৯৬০-এর দশকের প্রারম্ভে সমকাল, কণ্ঠস্বর, স্বাক্ষর, অচিরা ইত্যাদি পত্র-পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন কবি মোহাম্মদ রফিক। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ বৈশাখী পূর্ণিমা প্রকাশিত হয়। এরপর লিখেছেন কীর্তিনাশা (১৯৭৯), স্বদেশী নিশ্বাস তুমিময় (১৯৮৮), রুপকথা কিংবদন্তি (১৯৯৮), কালাপানি (২০০৬), নোনাঝাউ (২০০৮), দোমাটির মুখ(২০০৯)-এর মতো একাধিক বই। লিখেছেন বেশ কিছু গদ্যের বইও। গদ্য ও পদ্য মিলিয়ে বইয়ের সংখ্যা ৩০-এর বেশি।
শুধু ওপার বাংলা নয়, পশ্চিমবঙ্গ থেকেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতা সংকলন। এপারেও রয়েছে মোহাম্মদ রফিকের অগুণতি ভক্ত। লেখনীর স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক-এর মতো নানাবিধ সম্মান।