একদিন দুদিন ধরে নয়, টানা ৭৫ দিন ধরে পালন করা হয় ‘দশেরা’। ভারতেরই এক রাজ্যে এতদিন ধরে ‘দশেরা’ পালন করা হয়। আর সেটি হল ছত্তিশগড়। ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলায় দশেরা উদযাপন শুরু হয়েছে রবিবার। প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য এই দশেরা। দেবী ‘কাছিন’-এর নির্দেশেই এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। বস্তারের রাজ পরিবারকে উৎসব শুরু করার অনুমতি দেন দেবী। আদতে একটি কন্যাশিশু দেবী ‘কাছিন’ হিসেবে পরিচিত। তিনি কাঁটার দোলনায় দোল দিয়ে ‘দশেরা’ উদযাপনের জন্য রাজ পরিবারকে অনুমতি দেন। এই গোটা আয়োজনটি করা হয় জগদলপুরে। পুজো উপলক্ষে পুরো শহরটি সমৃদ্ধ সজ্জা এবং শোভাযাত্রার সঙ্গে জীবন্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: বৈষ্ণবমতের পুজোয় বলিদানও হয়! সুরুল জমিদারবাড়ির পুজোয় পরতে পরতে বৈচিত্র্য
বস্তারে দশেরা উৎসব সাধারণত ৭৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলে। আর এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই এটি দেশের দীর্ঘতম দশেরা উদযাপন। বস্তারে এই ৭৫ দিনের উদযাপনে আলাদা আলাদা আচার-অনুষ্ঠান করা হয়। নবরাত্রি উৎসবের দশম দিনে দশেরা পালিত হয়। দশেরাতে রাবণমূর্তি পোড়ানো হয়। এখানে তার বদলে উৎসবটি মহিষাসুর মর্দিনীর আদিশক্তিকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শুধু রাজপরিবার নয়, জেলার আদিবাসী সম্প্রদায়ও এখানে দশেরা উদযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেও ত্বক লালচে ভাব দেখা দিচ্ছে? একটি কারণেই হতে পারে এমনটা
রাজ পরিবার অন্যতম সদস্য কমলচন্দ্র ভঞ্জদেব এএনআইকে জানিয়েছেন, ‘৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই রীতি মেনে পুজো করা হচ্ছে। দেবী আমাদের উৎসব উদযাপনের অনুমতি দেওয়ার পরে তা শুরু হয়। ‘কলস স্থাপন’’ এবং ‘রথযাত্রা’র আচার শুরু হবে আজ।’ এই প্রসঙ্গে তিনি জানান একটি প্রচলিত বিশ্বাসের কথা। কমলচন্দ্র বলেন, ‘আমাদের রাজার দুই কন্যা ছিল কাছিন দেবী এবং রাইলা দেবী। তারা নিজেদের ‘জোহর’ (শত্রুদের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরিবর্তে নিজেকে আগুন পুড়িয়ে দেওয়ার একটি কাজ) করেন। তখন থেকেই কন্যাদের পবিত্র আত্মা এই অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায়। তাঁরা এখনও নবজাতক কন্যাশিশুকে আশীর্বাদ করেন। তাঁর অনুমতি নিয়েই ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলের পুজোয়।