দেশও বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। নাহ, যুদ্ধবিগ্রহ কোনওকিছুই তার জন্য় জরুরি নয়। দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও ভ্যানিশ হয়ে যেতে পারে একটি দেশ। কীভাবে? যদি জন্মহার কমতে থাকে। যদি বাড়তে থাকে বয়সজনিত কারণসহ নানা কারণে মৃত্যুর হার। ঠিক যেমনটি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। একাধিক পরিসংখ্যান ও রিপোর্ট জানাচ্ছে পরের শতাব্দী শুরু হওয়ার আগেও উধাও হয়ে যেতে পারে এশিয়ার এই দেশটি। নেপথ্যে কারণ হিসেবে থাকবে দেশের ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা।
কী বলছে পরিসংখ্যান?
সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার কমে ২.১ রিপ্লেসমেন্ট লেভেলের নিচে নেমে গিয়েছে। রিপ্লেসমেন্ট লেভেল কাকে বলে? বিশেষজ্ঞদের কথায়, রিপ্লেসমেন্ট লেভেলের অর্থ একজন মহিলার যতজন সন্তান থাকলে একটি দেশের জনসংখ্যা ধ্রুব থাকে। অর্থাৎ বাড়েও না কমেও না। এই সংখ্যাটি হল ২.১ (অঙ্কের নিয়মে সংখ্যাটি দশমিকে আসে। আদতে এর অর্থ অন্তত ২ টো বা ৩ টে সন্তানের জন্ম দেওয়া)। এতে মৃত্যুহারের সঙ্গে জন্মহার সঠিকভাবে পাল্লা দিয়ে একটি দেশের জনসংখ্যা ধ্রুব রাখতে পারে। একটি শর্ত এখানে প্রযোজ্য। যখন দেশে কোনও অনুপ্রবেশ বা বহির্গমন হচ্ছে না, তখনই এই হিসেব সঠিক।
আরও পড়ুন - Paramilitary Force Issues: আধাসামরিক বাহিনীতে বাড়ছে আত্মহত্যা-চাকরি ছাড়ার হার, সামাল দিতে নয়া ব্যবস্থা
কতটা কমতে পারে জনসংখ্যা?
এই বিষয়ে একাধিক পরিসংখ্যান একাধিক তথ্য় দিচ্ছে। যেমন ইকোনমিকস টাইমসের একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, যে হারে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার কমছে, তাতে ২১০০ সাল নাগাদ দেশের জনসংখ্যা ১৭ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ৭০ লাখে এসে দাঁড়াবে। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ৫২ মিলিয়ন অর্থাৎ ৫ কোটি ২০ লাখ। অন্য পরিসংখ্যানগুলি জনসংখ্যা আরও কমবে বলে আশঙ্কা করছে। যেমন একটি পরিসংখ্যানের মতে, ১৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসতে পারে জনসংখ্যা।
কমছে গর্ভধারণের হার
জন্মহারের পাশাপাশি ব্যাপক হারে কমছে গর্ভধারণের হার। স্ট্য়াটিসটিক্স কোরিয়ার একটি রিপোর্ট মোতাবেক গর্ভধারণের হার দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। কমতে কমতে এখন জন্মহার এসে দাঁড়িয়েছে ০.৭ শজন্তাংশে। যা বিশ্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে।
আরও পড়ুন - Astok Gaan: ‘দিদি চাইলে কী না হয়!’ অনুদানের আশায় আজও অপেক্ষায় মালদার অষ্টকগানের শিল্পীরা
কোন কোন কারণে হচ্ছে এমন?
জন্মহার কমার পিছনে দেরিতে বিয়ে, কাজের চাপ, অভিভাবকত্বের দায়িত্ব এড়াতে চাওয়ার মতো প্রবণতাগুলি বড় কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার দাবি, সরকারের তরফে যথাযথ প্রকল্প বানিয়ে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা।