ফেব্রুয়ারি মাসেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তিনি।যুদ্ধ আবহে দু’মাসের মাথায় আবার মার্কিন সফরে গিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এদিকে, আন্তর্জাতিক আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে তাঁকে। এই অবস্থায় শত্রু দেশের উপর দিয়ে যাওয়া যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। সে কথা মাথায় রেখেই প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বাড়তি রাস্তা পার করে ঘুরপথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের কোপে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। রেহাই পায়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশ ইজরায়েলও। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। যদিও তাঁদের টপকে বন্ধু ইজরায়েল সবার আগে পেয়েছেন ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। সেই মতো সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন নেতানিয়াহু। এই সফরে নেতানিয়াহু ট্রাম্প ও সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবেন। তবে তাঁর এই সফর ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েল ও হামাস যুদ্ধের জেরে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। ফলে আদালতের এই গ্রেফতারি পরোয়ানাকে মান্যতা দিতে পারে যে কোনও দেশ। নেতানিয়াহুর আশঙ্কা হাঙ্গেরি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সহজ পথে এমন কিছু দেশ রয়েছে যারা সুযোগ পেলে এই পরোয়ানা জারি করে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেন। ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই হাঙ্গেরি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য ৪০০ কিলোমিটার বা ২৪৮ মাইল পথ বাড়তি ঘুরতে হয়েছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। সে দেশের গোয়েন্দা বিভাগের অনুমান আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড আন্তর্জাতিক আদালতের তরফে জারি করা এই গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে। এই অবস্থায় এই তিন দেশকে এড়িয়ে গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স এবং আটলান্টিক মহাসাগর হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
সোমবারই হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নেতানিয়াহু। কী কী বিষয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথা হতে পারে, তাও জানিয়েছে নেতানিয়াহুর দফতর। ফেব্রুয়ারিতে যখন ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু সাক্ষাৎ করেছিলেন, তখন আলোচনার প্রধান বিষয়ই ছিল ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ। গত দু’মাসে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। নতুন করে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা। তবে সোমবারের বৈঠকে শুধু হামাস নিয়ে আলোচনা হবে, তা নয়। এরমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেছেন। বাদ যায়নি বন্ধু ইজরায়েলও। ট্রাম্পের ঘোষণামতো ইজরায়েলের উপরও ১৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু শুল্কনীতি নিয়ে আলোচনা করবেন। একই সঙ্গে গাজা থেকে পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনা, ইজরায়েলি-তুরস্ক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে রাষ্ট্রনেতার মধ্যে।