লোকসভার লড়াইয়ে সাফল্য আসেনি। এবার মুম্বই হামলার চক্রী আজমল কাসভকে ফাঁসিতে ঝোলানোর কারিগর আইনজীবী উজ্জ্বল নিকমকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছেন এনডিএ সরকার।শুধু তাই নয়, ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলাতেও আইনজীবী হিসাবে জঙ্গিদের বিপক্ষে লড়েছেন উজ্জ্বল। ঘুরপথে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য হিসাবে রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছে তিনি। আর রাজনীতিতে পর্দাপনের মধ্যেই ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন নিকম।
এনডিটিভি-র এক সাক্ষাৎকারে উজ্জ্বল নিকম বলেন, 'আইনের চোখে সঞ্জয় দত্ত অপরাধ করেছেন। কিন্তু তিনি সোজাসাপ্টা লোক...আমি তাকে নির্দোষ বলে মনে করতাম। আমার শুধু একটা কথাই বলার আছে। ১২ মার্চ বিস্ফোরণের কয়েকদিন আগে, তাঁর (সঞ্জয় দত্তের) বাড়িতে একটি ভ্যান এসেছিল। ভ্যানে অস্ত্রে ছিল- হ্যান্ড গ্রেনেড, একে৪৭। আবু সালেম (গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী) এগুলো এনেছিল। সেখান থেকে সঞ্জয় কিছু হ্যান্ড গ্রেনেড এবং বন্দুক তুলে রেখেছিলেন। তারপর তিনি সব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কেবল একটি একে৪৭ রেখে দিয়েছিলেন। যদি তিনি সেই সময় পুলিশকে জানাতেন, তাহলে মুম্বই বিস্ফোরণ কখনও ঘটত না।'
আরও পড়ুন-চারদিকে হিংস্র পশু-সাপ! ঘন জঙ্গলের গুহায় রাশিয়ান মহিলা, তারপর যা হল...
তিনি আরও বলেন, তিনি সঞ্জয় দত্তের আইনজীবীকেও এই বিষয়ে বলেছিলেন-একে৪৭ থেকে কখনও গুলি করা হয়নি এবং এটি নিষিদ্ধ অস্ত্র। কিন্তু পুলিশকে না জানানোই ছিল বিস্ফোরণের কারণ, যার ফলে এত মানুষের মৃত্যু হয়। নিকম আরও একটি গোপনীয় কথা প্রকাশ করেছেন। তা হল, অস্ত্র আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সময় সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন।সেই সময় পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে সঞ্জয় দত্তের কথোপকথন সেই সময় খবরের শিরোনামে উঠে আসে।তিনি বলেন, 'আমি সঞ্জয়কে বলেছিলাম, তুমি এটা করো না। মিডিয়া তোমাকে দেখছে। তুমি একজন অভিনেতা। যদি তুমি সাজা শুনে ভয় পাও, তাহলে মানুষ তোমাকে দোষী মনে করবে। তোমার আপিল করার সুযোগ আছে।' তখন অভিনেতা বলেন, 'হ্যাঁ স্যার, হ্যাঁ স্যার।' নিকম আরও বলেন, সাজা ঘোষণার পর সঞ্জয় দত্ত নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাঁর কথায়,'আমি তাঁর শরীরের ভাষা বদলে যেতে দেখেছি। তিনি আদালতের রায় নিতে পারছিলেন না।'
আরও পড়ুন-চারদিকে হিংস্র পশু-সাপ! ঘন জঙ্গলের গুহায় রাশিয়ান মহিলা, তারপর যা হল...
স্পেশ্যাল পাবলিক প্রসিকিউটর উজ্জ্বল নিকম আইনজীবী হিসাবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা লড়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম মধ্যে অন্যতম হল মুম্বইয়ে ২৬/১১ জঙ্গি হামলার মামলা। গোটা দেশের নজর ছিল সেই মামলায়। মুম্বই হামলার পর একমাত্র জীবিত জঙ্গি আজমল কাসভকে ফাঁসিতে ঝোলানোর নেপথ্যে অন্যতম কারিগর তিনি। শুধু তাই নয়, ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলাতেও আইনজীবী হিসাবে জঙ্গিদের বিপক্ষে লড়েছেন উজ্জ্বল। অস্ত্র আইনে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে জেলের ঘানি টানানোর নেপথ্যেও রয়েছে এই উজ্জ্বল নিকমেরই হাত। বর্ষীয়ান এই আইনজীবী গত লোকসভায় বিজেপির টিকিটে লড়েন উত্তর-মধ্য মুম্বই লোকসভা কেন্দ্র থেকে। কিন্তু সেখানে তিনি পরাজিত হন।