আইআইটি খড়গপুরে ছাত্রদের আত্মহত্যার ঘটনা কিছুতেই থামছে না। কিছুদিন আগেই চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের রহস্য মৃত্যু ঘিরে ফের আলোচনায় দেশের অন্যতম সেরা এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। একের পর এক ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: আইআইটি খড়্গপুরে ফের ছাত্রের মৃত্যু, হস্টেল থেকে মিলল চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ার দেহ
রবিবার ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী জানান, ছাত্রছাত্রীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে শীঘ্রই প্রেরণামূলক বক্তৃতার আয়োজন করা হবে। ইনস্টিটিউটের মধ্যে পেশাদার বক্তাদের এনে নিয়মিত সেশন করানো হবে। ছাত্ররা যাতে অবসাদ, উদ্বেগ বা চাপের মুহূর্তে নিজেকে একা না ভাবেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে পিছপা না হন সেই কারণে এই উদ্যোগ। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শুক্রবারের ঘটনার পর। রাজেন্দ্র প্রসাদ হলের একটি ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ঋতম মণ্ডল নামে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক চতুর্থ বর্ষের ছাত্রের। মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ঘটনার সঙ্গে মানসিক চাপ বা একাকীত্বের যোগ রয়েছে বলেই আশঙ্কা। গত সাত মাসে এটিই চতুর্থ ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু এই ক্যাম্পাসে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৫ জুলাই থেকে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য শুরু হতে চলেছে ইনডাকশন প্রোগ্রাম। এতে মানসিক স্বাস্থ্য ও চাপ সামলানোর গুরুত্বের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সফল প্রাক্তনদের কথোপকথন, জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ব্যর্থতার গল্প শোনানো হবে। ফলে ছাত্ররা বুঝতে পারবেন, চাপে ভেঙে পড়া কোনও লজ্জার বিষয় নয়।ডিরেক্টর বলেন, ‘আমরা ছাত্রছাত্রীদের বোঝাতে চাই একাকীত্ব বা উদ্বেগ থাকলে তা চেপে রাখার দরকার নেই। ইনস্টিটিউট তাঁদের পাশে রয়েছে, কথা বলার সুযোগ রয়েছে, সমাধান খোঁজার পথ রয়েছে।’
এছাড়াও, শনিবার এমটেক ইন্ডাকশন প্রোগ্রামে তিনি ছাত্রদের ভার্চুয়াল দুনিয়ার বদলে বাস্তব বন্ধু এবং সহপাঠীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার পরামর্শ দেন। তাঁর মতে, এমন আন্তঃসম্পর্কই ছাত্রজীবনের মানসিক ভারসাম্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু ছাত্র গ্রীষ্মের ছুটিতে পরিবারের চাপে নিজে থেকে ইন্টার্নশিপে অংশ নিচ্ছে। এতে পড়াশোনা ও মানসিক ভারসাম্যে প্রভাব পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে মৃত ছাত্রের রুমমেটকে অন্য ঘরে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং শনিবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ওই ঘর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে।