আজ, শনিবার গোটা দেশের মতো বাংলাতেও লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে। বীরভূমের ভোট আগেই হয়ে গিয়েছে। আজ সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট চলছে। এখন এই নির্বাচন চললেও থেকে বহু দূরে বসে দিন কাটাচ্ছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল। জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে থাকলেও তাঁর আত্মবিশ্বাস এতটুকু কমেনি। তাই তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন বলে আশা করেন। এমনকী আবার নিজের হাতে করে সাজাতে পারেন দলের সংগঠন। তিহারের জেলে থেকেও সব খবর পান তিনি। জেলার রাজনীতি, রাজ্য রাজনীতি থেকে দেশের রাজনীতির খবর রাখেন তিনি। আর যাঁরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন জেলে তাঁদের কাছ থেকে সব খবর নেন কেষ্ট। এবার তাঁদের মাধ্যমেই নয়া বার্তা দিলেন কেষ্ট।
অনুব্রত মণ্ডল জেলে বসেই জেলার নেতাদের খবর রাখেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে কারা নিজেদের সর্বেসর্বা ভাবছে—সব খবরই তাঁর নখদর্পণে রয়েছে। আর তাই কিছু নেতার বিদ্রোহের আভাস পেয়েছেন কেষ্ট মণ্ডল। যা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, জেলে থাকলেও খাতায়কলমে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কেষ্টই থাকবেন। কিন্তু তার পরেও জেলার কিছু কিছু নেতারা নিজেদের মতো করে এলাকায় দল চালাতে চাইছেন। যা কেষ্টর একেবারেই পছন্দ নয়। তাই তো তাঁর বার্তা, ‘আমায় ফিরতে দে, তারপর যা বলার বলব।’
আরও পড়ুন: ‘আমি চাই আমাদের নেতা রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হোক’, অকপটে পছন্দ প্রকাশ খাড়গের
এদিকে বীরভূম জেলায় সব খবর পেয়ে তিহার থেকে জেলায় বার্তা পাঠিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম কোনও লোকসভা নির্বাচনে সম্পূর্ণ জেলার বাইরে আছেন অনুব্রত মণ্ডল। যে সংগঠন তিনি নিজে হাতে তৈরি করে ছিলেন আজ তাতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে অন্য কেউ। এমনকী অনুব্রত মণ্ডলকে ভুলিয়ে দিতে চাইছেন কিছু নেতা মানুষের মন থেকে। আর তাতেই বেজায় চটেছেন কেষ্ট বলে সূত্রের খবর। তবে এখনও কিছু অনুগামী কেষ্ট দার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। সম্প্রতি আইনগত কারণে কয়েকজন আইনজীবী এবং জেলার নেতারা তিহাড় জেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁদের এমন বার্তা দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে সূত্রের খবর, এভাবেই কেষ্ট জেলার সব খবর রাখেন। দল তাঁর উপর এখনও আস্থা রেখেছে শুনে তিনি খুশি। কিন্তু জেলার নেতারা যাঁরা এক সময় তাঁর সামনে সাহস করে দাঁড়াতে পারতেন না তাঁরা এখন ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। অনুব্রত মণ্ডল নামটা জেলা থেকে মুছে দিতে চাইছেন। এমন খবরই পেয়েছেন কেষ্ট। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতার সঙ্গে সম্প্রতি জেলে কথা হয় কেষ্টর। সেই নেতাই জেলায় ফিরে জানান, দলের কয়েকজন নেতার উপর খুবই রেগে আছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। একসময় তাঁর কথায় যেসব নেতা–কর্মীরা চলত, তাঁরাই এখন সম্পূর্ণ ভোল বদলেছে। আর তার জেরেই কেষ্ট বলে পাঠিয়েছেন, ‘আমায় ফিরতে দে, তারপর যা বলার বলব।’