মার্কিন শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের অব্যাহত হুমকির মাঝেই এবার ফিলিপিন্সের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে এক বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সদ্য ভারতে সফরে এসেছেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। আর তাঁর এই ভারত সফরের সময়ই ভারত-ফিলিপিন্স কৌশলী অংশিদারিত্বের সমঝোতা হয়। এছাড়াও ভারতীয় পর্যটকদের ভিসা ছাড়াই সেদেশে প্রবেশের বিষয়ে ফিলিপিন্স ছাড়পত্র দিয়েছে। পাশাপাশি ভারতও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিল্লি-ম্যানিলা আরও বেশি সরাসরি বিমান চলাচল হবে।
মঙ্গলবার ভারত এবং ফিলিপিন্স একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে প্রবেশ করেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জোর দিয়ে বলেছেন যে এই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে গভীর পারস্পরিক বিশ্বাসের প্রতীক। এদিন দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ফার্দিনান্দ। যখন বারবার আমেরিকার ট্রাম্পের তরফে ভারতের প্রতি হুমকি, হুঁশিয়ারি আসছে মার্কিন শুল্ক নিয়ে, তখনই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে ফিলিপিন্স-ভারত সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে নরেন্দ্র মোদী বলেন,' এটা আনন্দের বিষয় যে আজ আমরা আমাদের সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বের মর্যাদায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই অংশীদারিত্বের সম্ভাবনাকে ফলাফলে রূপান্তরিত করার জন্য একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে।' তিনি বলেন,'ভারত এবং ফিলিপিন্স ইচ্ছানুযায়ী বন্ধু এবং ভাগ্যানুযায়ী অংশীদার। ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত, আমরা ভাগ করে নেওয়া মূল্যবোধের দ্বারা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের বন্ধুত্ব কেবল অতীতের বন্ধুত্ব নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।'
ভারত এবং ফিলিপিন্স কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর উদযাপন করছে এবং এই উপলক্ষে দুই রাষ্ট্রনেতা একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছেন। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের দাপটের চেষ্টার প্রেক্ষাপটে ফিলিপিন্সের সঙ্গে ভারতের এই সমীকরণ নিঃসন্দেহে বেজিংর নজর কাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এদিন স্পষ্ট করে দেন, ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতিতে ফিলিপাইন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, এবং ভারতের 'MAHASAGAR' দৃষ্টি ভঙ্গির দিক থেকেও বড় অংশ। মোদী সাফ জানান,'আমরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি এবং নিয়ম-ভিত্তিক শৃঙ্খলার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে নৌ-চলাচলের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি।'
উল্লেখ্য, দুই দেশের মধ্যে ৯ টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ফিলিপিন্স ভারত থেকে প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটি আরও বাড়ানোর জন্য, ভারত-আসিয়ান 'মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি'র পর্যালোচনা শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। এর সাথে সাথে, একটি দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আমাদের কোম্পানিগুলি ফিলিপাইনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করছে, যার মধ্যে তথ্য ও ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, অটোমোবাইল, অবকাঠামো, খনিজ পদার্থ রয়েছে।