উত্তরপ্রদেশে ধর্মান্তরণ চক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবা। বলরামপুর জেলার বাসিন্দা জামালউদ্দিন এক সময়ে সাইকেলে করে আংটি এবং তাবিজ বিক্রি করত। বর্তমানে তার ৪০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০৬ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।এছাড়াও তার কমপক্ষে দু’টি স্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আর এই তথ্য সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে যোগী রাজ্যে। (আরও পড়ুন: ভারতের কোনও রাজ্যের চিনের সঙ্গে সীমান্ত নেই… বেজিংয়ের আঁতে ঘা দিয়ে বিস্ফোরক পেমা)
আরও পড়ুন: ভারতের পড়শির ওপর ৩০% শুল্ক ট্রাম্পের, চিঠিতে ভুল নাম লিখলেন রাষ্ট্রপ্রধানের
জানা গেছে, গত শনিবার লখনৌয়ের এক হোটেল থেকে ছাঙ্গুর বাবা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নীতু ওরফে নাসরিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরেই জামালউদ্দিনের বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।মূলত পশ্চিম এশিয়া থেকে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে।উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড (এটিএস) তদন্ত করে দেখছে যে, জামালউদ্দিনের সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র আছে কিনা।ইউপি স্পেশাল টাস্ক ফোর্সও এই মামলার তদন্ত করছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলরামপুরের স্থানীয় পুলিশ।এই তিন সংস্থা ছাড়াও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও ছাঙ্গুর বাবার আয়-ব্যয়ের হিসেব বের করার জন্য একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ধর্মান্তরণের জন্য দরিদ্র, অসহায় শ্রমিক, দুর্বল শ্রেণীর এবং বিধবা মহিলাদের প্রলোভন, আর্থিক সাহায্য, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল। অনেক সময় ভয় দেখিয়েও ধর্মান্তরণে বাধ্য করা হয়ে।'মঙ্গলবার ইডির লখনউ ইউনিটে এই বিষয়ে একটি মামলার দায়ের করা হয়েছে। কে টাকা পাঠিয়েছিল, কত টাকা পাঠিয়েছিল এবং কী কারণে পাঠিয়েছিল, সমস্ত দিক তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। (আরও পড়ুন: বেজায় চটেছেন মহুয়া, এবার 'শ্বশুরবাড়ি' বয়কটের হুঁশিয়ারি মহুয়ার)
আরও পড়ুন: মোদীর নতুন বন্ধুর ওপর ৫০% শুল্ক 'সম্রাট' ট্রাম্পের, শুরু নয়া বাণিজ্য যুদ্ধ
ছাঙ্গুর বাবার সাম্রাজ্য
ছাঙ্গুর বাবা আদতে উত্তরপ্রদেশের রেহরা মাফি গ্রামের বাসিন্দা হলেও, তার সাম্রাজ্য নেপাল সীমান্তবর্তী বলরামপুর জেলার উত্তরৌলা এলাকায় অবস্থিত। এক সময়ে সে সাইকেলে করে আংটি এবং তাবিজ বিক্রি করত।পরে রেহরা মাফি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছিল। এখন পর্যন্ত পাওয়া নথিপত্র অনুযায়ী, তার নামে থাকা ৪০টি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ১০৬ কোটি টাকা রয়েছে। তদন্ত অনুসারে, এই সমস্ত অর্থই এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলি থেকে।নিতু ওরফে নাসরিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই রেহরা মাফি গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে মাধোপুরে একটি দরগার পাশের জমিতে বাড়ি তৈরি করেছিল ছাঙ্গুর বাবা। তবে তদন্তে জানা গিয়েছে বাড়িটি অবৈধ। সরকারি জমিতে তৈরি করা হয়েছিল। বুধবার বুলডোজার চালিয়ে বাড়িটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। (আরও পড়ুন: ঋতুস্রাব হচ্ছে কিনা তা দেখতে স্কুলে নগ্ন করা হল ছাত্রীদের, ধৃত প্রিন্সিপাল)
সূত্রের খবর, বাড়ির দুটি অংশ ছিল। একটা অংশে ছাঙ্গুর বাবা, তার পরিবার এবং সহযোগীরা থাকত। অন্য অংশটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হলেও, আজ পর্যন্ত কোনওটি বাস্তবায়িত হয়নি।এক সময়ে বলা হয়েছিল সেখানে হাসপাতাল তৈরি করা হবে। কয়েক বছর পরে, বলা হয়েছিল ওই ভবনে হাসপাতাল তৈরি সম্ভব নয়। তাই সেখানে একটি স্কুল বা কলেজ তৈরি করা হবে। তারপর বছরের পর বছর কেটে গেলেও, স্কুল-কলেজের দেখা মেলেনি।কী উদ্দেশ্যে ভবনটি ব্যবহৃত হতো, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেখানে দুটি কুকুর এবং ১৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল। (আরও পড়ুন: ভারতকে 'বিবেক ও নৈতিকতার' পাঠ পড়াতে এল ইউনুসের বাংলাদেশ)
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরে 'হেরো পার্টি' পাক বন্দনায় চিন, নিজেদের সম্মান বাঁচাতেই এই কাণ্ড
বলরামপুরের ওই বাড়ি ছাড়াও ছাঙ্গুর বাবার আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় অনেকগুলি স্থাবর সম্পত্তি ছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এরমধ্যে একটি মহারাষ্ট্রের লোনাভালায় অবস্থিত। সেটি ২০২৩ সালে ছাঙ্গুর বাবা এবং নিতুর নামে কেনা হয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি ওই জমির দাম ১৬.৪৯ কোটি টাকা।মহম্মদ আহমেদ খান নামে এক ব্যক্তি জমিটি বিক্রি করেছিলেন। এদিকে, ছাঙ্গুর বাবাকে তহবিল পাঠানোর দায়ে আরও এক আহমেদ খানকেও খুঁজছেন তদন্তকারীরা। দুই আহমেদ খান একই ব্যক্তি কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ লেখেন, রাজ্যের মা-বোনদের সম্মানরক্ষায় বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে জালালউদ্দিনের কাজ শুধু অসামাজিক নয়, দেশ বিরোধীও। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার কোনও আপোস করবে না। অভিযুক্ত ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।