ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা ও ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে একাধিক অভিযোগের মাঝেই বিহারে ফের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পাটনায় স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্রে বাড়ির পোষ্য কুকুরের নাম বিতর্কের ঘটনা ধামাচাপা পড়ার আগেই বিহারের নওয়াদা জেলায় ফের একই ঘটনা ঘটল। ‘ডগ বাবু’র পর এবার 'ডগেশ বাবু' নামে একটি নতুন আবেদন জমা পড়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানেও একটি কুকুরের ছবি দিয়ে আবেদন করা হয়েছে।
নতুন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সঙ্গে সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। নওয়াদা জেলাশাসক রবি প্রকাশ স্থানীয় থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং আরটিপিএস পোর্টালের অপব্যবহার করার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেন, বিষয়টি মজার স্তরে এসে ঠেকেছে। এই ধরনের প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে বিকৃত করা গ্রহণযোগ্য নয় এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, 'প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে এই ধরনের হস্তক্ষেপ কোনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
জেলার সিরডালা ব্লকে অনলাইনে পোর্টালে যে আবেদন জমা পড়েছে, তার বিবরণে রয়েছে- 'ডগেশ বাবু'। বাবার নাম 'ডগেশের পাপা'। মায়ের নাম 'ডগেশের মামি'। গ্রাম খারোন্ধ, ওয়ার্ড নম্বর ১১। ডাকঘর শেরপুর। ব্লক ও অঞ্চল- শেরপুর সিরডালা। জেলা- নওয়াদা। লিঙ্গ- পুং লিখে পোষ্য কুকুরের ছবি দিয়ে আবেদন জমা পড়ে।সিরডালা জেলার জোন অফিসার অভিনব রাজ ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন এবং এরপর থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একাধিক ধারার অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে: ধারা ৩১৯(২): জালিয়াতি, ধারা ৩৪০(১) এবং (২), ধারা ২৪১ এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইন,২০০০-এর ধারা ৬৬ডি।
প্রথম ঘটনা
এর আগে পাটনায় একটি কুকুরের নামে স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র জারি হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনাটি পাটনা জেলার মাসৌঢ়ি সার্কেলের অধীনে এক পঞ্চায়েতের। এই ঘটনায় পাটনা জেলা প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ২৪ জুলাই যে শংসাপত্রটি ইস্যু করা হয়েছিল, তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সরকারি তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের সাসপেন্ডও করা হয়েছে।
রিপোর্টে উঠে আসে, তথ্য যাচাই না করেই শংসাপত্র অনুমোদনের সুপারিশ করেন এক সরকারি কর্মী। সেই কম্পিউটার অপারেটরকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে।এছাড়া, রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে, যাতে শংসাপত্র ইস্যু করা সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। জেলাশাসক বলেন, 'জাল নথির ভিত্তিতে শংসাপত্রটি জারি করা হয়েছিল, এবং এটি কোনও অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল না বরং রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনকে অপদস্থ করার জন্য ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা ছিল।'