সরকারি স্কুলের একটিই দেওয়াল রঙ করা হবে। তার জন্য লাগবে ৪ লিটার রঙ।মাত্র একটি দেওয়াল রং করতে ৬৫ জন রাজমিস্ত্রিকে সাহায্য করবেন ১৬৮ জন জোগাড়ে। খরচ ১.০৭ লাখ টাকা। মধ্যপ্রদেশের শাহদোল জেলায় সাকান্দি গ্রামের সরকারি স্কুলে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আর এই খবর ভাইরাল হতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার।
জানা গিয়েছে, শাহদোল জেলায় সাকান্দি হাই স্কুলে ১ লক্ষ ৬ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অথচ রেকর্ডে লেখা রয়েছে, এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল ১৬৮ জন শ্রমিক ও ৬৫ জন রাজমিস্ত্রি। মাত্র ৪ লিটার অয়েল পেইন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল। হিসেবের এই গরমিল ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।এখানেই শেষ নয়। চমক রয়েছে আরও। শাহদোল জেলাতেই অবস্থিত নিপানিয়া গ্রামের একটি স্কুলে ১০টি জানালা এবং চারটি দরজা রং করার জন্য ২৭৫ জন জোগাড়ে এবং ১৫০ জন রাজমিস্ত্রি নিযুক্ত করা হয়েছিল। সেখানে ২০ লিটার রং কিনতে খরচ হয়েছে ২.৩ লক্ষ টাকা।সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই স্কুলেরই বিল ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে। বিল দু’টিও আবার পরপর ক্রমাঙ্কের, একই দিনের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দুই স্কুলেই রঙের কাজ করেছে ‘সুধাকর কনস্ট্রাকশন’ নামে একটি নির্মাণ সংস্থা। বিল তৈরি হয়েছে চলতি বছরের ৫ মে। নিপানিয়া গ্রামের স্কুলটির বিলে দেখা যাচ্ছে, সেটি তৈরি হওয়ার মাসখানেক আগেই তাতে অনুমোদন দিয়েছিলেন স্কুলের অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন-পাটনায় ব্যবসায়ী খুন! ভোটের আগে নীতীশকে তোপ চিরাগের, অস্বস্তিতে বিজেপি
এই তথ্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। স্থানীয়দের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্কুলগুলির পরিদর্শনে যান বেওহারি এসডিএম নরেন্দ্র সিং ধুরভে। তিনিও স্বীকার করেছেন, কাজের মান অত্যন্ত খারাপ এবং তদন্তের জন্য সমস্ত নথিপত্র তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও একটি অদ্ভুত অসঙ্গতি নজরে এসেছে। নিপানিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৪ এপ্রিল রসিদ স্বাক্ষর করলেও নির্মাণকারী সংস্থা 'সুধাকর কনস্ট্রাকশন' সেটি জমা দেয় ৫ মে। এক মাসের তারিখের এই পার্থক্য জালিয়াতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।বিতর্কের জেরে জেলা স্কুল পরিদর্শক ফুল সিং মারপাচি জানান, তদন্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, 'দু’টি স্কুলের বিলের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তথ্যপ্রমাণ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।' অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী রাও উদয় প্রতাপ সিং প্রধান সচিব এবং কমিশনারকে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-পাটনায় ব্যবসায়ী খুন! ভোটের আগে নীতীশকে তোপ চিরাগের, অস্বস্তিতে বিজেপি
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে শাহদোল জেলা কালেক্টর কেদার সিং বলেন, 'তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের পাশাপাশি স্কুলের অধ্যক্ষদের নোটিশ জারি করা হয়েছে। আমরা সাকান্দি গ্রামের স্কুলের তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি।' তিনি আরও বলেন, 'সন্ধ্যার মধ্যে নোটিশের উত্তর পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। নির্মাণ ও মেরামতের কাজ এখনও চললে, উপকরণের জন্য অর্থ তোলা যেতে পারে - তবে কাজ শেষ হওয়ার পরেই শ্রমিকদের প্রশোমিক দেওয়া হবে।' এদিকে প্রশ্ন উঠছে, এত বড় অস্বচ্ছতা কীভাবে নজর এড়িয়ে গেল, আর কোনও স্তরে কি এর সঙ্গে যুক্ত আরও কেউ রয়েছেন?