ওড়িশায় অধ্যাপকের যৌন হেনস্তার বিচার চেয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন দেওয়া ছাত্রীর মৃত্যুতে উত্তাল গোটা দেশ। এই আবহে ফের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ উঠেছে কলেজের দুই শিক্ষক-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে বেঙ্গালুরুতে। ইতিমধ্যে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা এবং জীববিদ্যার লেকচারার নরেন্দ্র এবং সন্দীপ। আর তৃতীয় জন হলেন তাঁদেরই অনুপ। তিনিও ওই কলেজেই কাজ করতেন।আর সেই কলেজেরই ছাত্রী নির্যাতিতা তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে নোটস দেবেন বলে ওই ছাত্রীকে আশ্বাস দেন পদার্থবিদ্যার লেকচারার নরেন্দ্র। এরপর ফোনে কথা বলতে বলতে ওই তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে নরেন্দ্রর।এরপর একদিন ছাত্রীকে বন্ধু অনুপের বাড়িতে ডাকেন পদার্থবিদ্যার শিক্ষক।অভিযোগ, সেখানে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন নরেন্দ্র।
সেই সময় ওই বাড়িতে হাজির ছিলেন জীববিদ্যার শিক্ষক সন্দীপ এবং তাঁদের বন্ধু অনুপ। এই ঘটনাটি তাঁরা ক্যামেরাবন্দি করেন। তারপর সেই ভিডিও দেখিয়ে ছাত্রীকে ক্রমাগত ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেন তাঁরা। তারপর ভয় দেখিয়ে অনুপের বাড়িতে ডেকে ওই ছাত্রীকে জীববিদ্যার শিক্ষকও ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। নির্যাতিতার অভিযোগ, শিক্ষকদের বন্ধুও ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেন। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, সিসিটিভি ফুটেজ বাইরে ছেড়ে দেওয়া হবে যদি তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত না হন। তারপর অনুপও ধর্ষণ করেন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনজন মিলে নানা ভাবে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করেন ওই ছাত্রীকে।
আরও পড়ুন-ছাত্রী মৃত্যুতে তোলপাড় দেশ! BJP সরকারের মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 'ওড়িশা বনধ'
এরপর আর চুপ করতে থাকতে পারেননি নির্যাতিতা। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত বাবা-মাকে খুলে বলেন ওই ছাত্রী। তারপরই পুলিশ এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রীর পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক এবং তাঁদের বন্ধুকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন-ছাত্রী মৃত্যুতে তোলপাড় দেশ! BJP সরকারের মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 'ওড়িশা বনধ'
উল্লেখ্য, ওড়িশার বালাসোরে কলেজেরই এক বিভাগীয় প্রধান ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করেছিল বলে অভিযোগ উঠে। তা নিয়ে কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ গ্রহণ কমিটি (আইসিসি)-র কাছে গত ১ জুলাই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। কী ভাবে মাসের পর মাস তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু এরপরেও কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তুলছিলেন ওই ছাত্রী। গত শনিবার এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়েই কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের আগে আগুন ধরিয়ে দেন নির্যাতিতা। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।