রাজ্যসভায় মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ ও জলপথ পরিবহণ মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, কলকাতা বন্দরের মোট ১৭০.৪ একর জমি বর্তমানে জবরদখলকারীদের দখলে রয়েছে। বিজেপি সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য দেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
আরও পড়ুন: বন্দরের অধীনে ১২টি রাস্তার বেহাল দশা, সংস্কার, নিকাশি উন্নয়ন নিয়ে চিঠি KMC-র
মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বন্দরের ‘শুল্ক আবদ্ধ এলাকা’তে বর্তমানে ৪২১ একর জমি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বাইরে রয়েছে আরও ৪,১২২ একর জমি। এর মধ্যে ১৭০.৪ একর এলাকা অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। এই জমিতে বসবাস বা ব্যবসা চালাচ্ছে মোট ৭০৬ জন জবরদখলকারী। যা উদ্বেগজনক। গত পাঁচ বছরে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে ২,৯৯৪ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। মূলত গুদাম ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, জাহাজ মেরামতের পরিষেবা, এবং নদীতীর সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প থেকে এই আয় হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন জাহাজমন্ত্রী। তবে মন্ত্রক মনে করছে, দখলমুক্ত হলে এই জমি বন্দরের আয় আরও বহুগুণ বাড়াতে পারবে।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানান। তাঁর অভিযোগ, বাম আমল থেকেই বন্দরের বিপুল জমি দখল হয়ে আছে। সেই সময়ও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। এখন তৃণমূল সরকারও কিছু করছে না। বরং বর্তমান দখলকারীরা প্রশাসনের নীরব সমর্থন পাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, রাজ্য প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণেই এতদিনেও দখলমুক্তকরণ সম্ভব হয়নি।
বিজেপি নেতার বক্তব্য, যদি বন্দরের এই দখল হওয়া জমি উদ্ধার করে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে কলকাতা বন্দর বছরে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা আয় করতে সক্ষম হবে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে, কারণ কেন্দ্রীয় তথ্য প্রকাশের পর রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে দায়-দায়িত্ব নিয়ে নতুন করে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে।