হাওড়ার সাঁকরাইলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে হিমাচল প্রদেশের ২১ বছর বয়সি ছাত্র কপিল কুমারের মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গত শনিবার বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসের ডাইভিং পুলে ভাসমান অবস্থায় তাঁর দেহ প্রথম দেখতে পান সহপাঠীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, পুলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে কপিলের। তবে পরিবারের অভিযোগ, ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত খুন। সোমবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হল তাঁর দেহের। আজ মঙ্গলবার তাঁর দেহ হিমাচলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: খড়্গপুর IIT-তে ফের ছাত্র মৃত্যু, শ্বাসনালীতে ওষুধ আটকে মৃত ২য় বর্ষের পড়ুয়া
কপিলের বাড়ি হিমাচল প্রদেশের হামিরপুরে। মাত্র দু’মাস আগে তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছয় মাসের কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন সাঁকরাইলের জলধূলাগড়ি এলাকার সিকম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। ঘটনার দিনে সকাল থেকে ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন কপিল। বিকেলে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ডাইভিং পুলে যান তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে সহপাঠীরা তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় পুলে ভাসতে দেখেন। দ্রুত স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলেও, পরে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মৃত্যুর খবর শুনে রবিবারই হাওড়ায় পৌঁছন কপিলের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, কপিল দক্ষ সাঁতারু ছিলেন, তাই ডুবে মারা যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
তাঁরা দাবি করেন, কলেজ প্রশাসন সত্য গোপন করছে এবং প্রথমে তাঁদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ কিংবা দেহ দেখার অনুমতিও দেয়নি। পরিবারের অভিযোগ, প্রায় আট লক্ষ টাকা কোর্স ফি নেওয়ার পরেও নিরাপত্তার দিকটি কলেজ একেবারেই অবহেলা করেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সাঁকরাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং ক্যাম্পাস ও হস্টেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় এবং পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়।
কলেজ প্রশাসনের তরফে অনিন্দিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পুল এলাকা ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা থাকে। কীভাবে কপিল সেখানে পৌঁছলেন, তা নিয়ে রহস্য রয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিবারকে সব রকমভাবে সহযোগিতা করছে এবং পুলিশের তদন্তে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য দিচ্ছে।
পরিবার মঙ্গলবার কপিলের দেহ নিয়ে হিমাচল প্রদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বলে জানা গিয়েছে।