রাজ্যকে কিছু না জানিয়ে ফের জল ছাড়ল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। শুক্রবার পাঞ্চেত জলাধার থেকে এক ধাক্কায় ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে ফের শুরু হয়েছে নবান্ন-ডিভিসি সংঘাত। জল ছাড়ার আগে রাজ্যকে কোনওরকম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি বলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আরও পড়ুন: লাগাতার বৃষ্টিতে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি, আরও জল ছাড়ছে ডিভিসি, বন্যার আশঙ্কা!
জানা গিয়েছে, সেচ দফতরের তরফে ই-মেলের মাধ্যমে কড়া আপত্তি জানানো হয়েছে ডিভিসিকে। মেলে উল্লেখ করা হয়েছে, এই জল ছাড়ার ফলে হাওড়া, হুগলি-সহ একাধিক জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনিতেই কিছুদিন আগেই লাগাতার বর্ষণে এই সমস্ত এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এখনও চলছে সেই ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেওয়ার কাজ। তার মাঝেই ফের জলছাড়া নতুন করে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে গোটা অঞ্চলকে। এমনটাই আশঙ্কা প্রশাসনের।
রাজ্যের প্রশ্ন, যখন পাঞ্চেত জলাধারের জলস্তর ৪১১ ফুটের আশেপাশে রয়েছে (যা বিপদসীমার নিচে) তখন কেন এতটা জল ছাড়া হল? কেন কোনওরকম যোগাযোগ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? ভবিষ্যতে যেন এমন সিদ্ধান্ত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নেওয়া হয়। সেই দাবিও জানানো হয়েছে। তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও বারবার একই অভিযোগ এনেছে নবান্ন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে ‘ম্যান মেড ফ্লাড’ বা মানবসৃষ্ট বন্যার অভিযোগ তুলেছিলেন ডিভিসির বিরুদ্ধে। এবার ফের সেই অভিযোগই উঠে এল প্রশাসনিক মহলে।
এদিনই রাজ্যের মুখ্যসচিব উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন ডিভিসির জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ডিভিসিকে চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নদীবাঁধ মেরামতির অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় যান সেচমন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। তিনি জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কেউ যাতে ত্রাণ থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করা হবে।নবান্নের দাবি, জলধারণ ও বণ্টনের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও সমন্বয় জরুরি। না হলে বৃষ্টির সঙ্গে জলছাড়া একসঙ্গে হলে বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং তার খেসারত দিতে হবে সাধারণ মানুষকে।