শুধুমাত্র আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা ভোটার আইডি থাকলেই কোনও ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণ হয় না। এমনটাই জানিয়ে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির জামিন খারিজ করে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন-জাতীয় পশু গরু! সংসদে 'রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন' নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর?
পুলিশ সূত্রে খবর, বাবু আবদুর রউফ সর্দার নামে এক বাংলাদেশিকে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। জাল নথি ব্যবহার করে এক দশকেরও বেশি সময় ভারতে থাকার অভিযোগে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যাক্তি জামিনের আর্জি জানাতে গিয়ে বলেন, 'আমার কাছে আধার কার্ড-প্যান কার্ড-সহ এ দেশের নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ রয়েছে। তাহলে কীভাবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হলাম?' যদিও ওই যুক্তি গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি বম্বে হাইকোর্টের। জামিন আর্জি খারিজ করতে গিয়ে বিচারপতি অমিত বোরকার বলেন, 'শুধুমাত্র আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা ভোটার আইডির মতো নথি থাকলেই একজন ব্যক্তি ভারতের নাগরিক হন না। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন হল আজ ভারতে জাতীয়তা সম্পর্কিত প্রশ্নগুলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রধান এবং নিয়ন্ত্রক আইন। নাগরিকত্ব আইন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কে ভারতের নাগরিক হতে পারেন এবং কীভাবে নাগরিকত্ব অর্জন করা যেতে পারে। আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং ভোটার আইডির মতো নথিগুলি শুধুমাত্র শনাক্তকরণ বা পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।'
আরও পড়ুন-জাতীয় পশু গরু! সংসদে 'রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন' নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর?
আদালত জানিয়েছে, এই নথিগুলো পরিচয়পত্র হিসেবে কাজ করলেও, নাগরিকত্ব নির্ধারণের জন্য আরও সুনির্দিষ্ট ও আইনি প্রমাণের প্রয়োজন। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য সাধারণত জন্ম সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট বা নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী অন্যান্য নথি প্রয়োজন হয় এবং এই বিষয়ে ভারতের নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর বিধান অনুসরণ করা হয়।বম্বে হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, বাবু আবদুর রউফ সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি কেবল অভিবাসন নিয়মের প্রযুক্তিগত লঙ্ঘনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারতীয় নাগরিকত্বের সুবিধা পাওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে পরিচয় গোপন করা এবং ভুয়ো নথি তৈরির মামলার ইঙ্গিত দেয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইন, বিদেশি আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রধানত পাসপোর্ট, জন্ম/মৃত্যু সার্টিফিকেট, বা কেন্দ্রীয় সরকারের সার্টিফিকেট দরকার। আদালতের এই রায়টি নির্দিষ্ট একটি মামলার প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে।